পিয়াল কুমিল্লা প্রতিনিধি :
গত ২২ আগষ্ট অতিবৃষ্টি ও ভারতীয় ঢলে বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া এলাকা দিয়ে নদীর প্রায় ১২০ মিটার বাঁধ ভাঙ্গার ৪ সপ্তাহ পার হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড, ত্রান- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যালয় কিংবা জেলা প্রশাসক কার্যালয় কেউ ই জানাতে পারেনি মেরামতের কাজ কবে নাগাদ শুরু হতে পারে। এদিকে গত এক সপ্তাহ আগে থেকে ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ বন্ধ হলেও আবারও আবহাওয়ার বৈরীতায় নদীর পানি বৃদ্ধির পাওয়ায় বুড়বুড়িয়া এলাকায় ভাঙ্গন দিয়ে প্লাবনের শঙ্কায় আছে বুড়িচংবাসী। তাদের দাবী, যত দ্রুত সম্ভব বাঁধ মেরামত কাজ শুরু করলে কিছুটা হলেও আশ্বস্ত হবে এলাকাবাসী। না হয় আবার যদি অতিবৃষ্টি ও ভারতীয় ঢল নামে তাহলে আবারও বন্যার শিকার হতে হবে।
তবে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়সার জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে খুবই সচেতন রয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধ মেরামত কাজ শুরু হবে।কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোঃ ওয়ালিউজ্জামান জানান, বাঁধ মেরামতে প্রস্তুতি কার্যক্রম চলছে। এই সপ্তাহের মধ্যে ঠিকাদার আহ্বান করা হয়েছে, পেলে সাথে সাথে কাজ শুরু করা হবে।
তিনি জানান, মেরামতে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। আমরা সার্ভে করেছি, ডিজাইন ডাটা পাঠিয়েছি। আশা করছি ডিজাইন বা নকশা ইতোমধ্যে পেয়ে যাবো। তা হাতে পেলেই ইস্টিমেট (সম্ভাব্য ব্যয় ) করবো। তা করতে পারলেই আমরা এই কাজের অনুমতি চাইবো। অনুমতি পেলেই কাজ শুরু হবে।
তবে নিশ্চয়তার সাথে তাঁরা কেউ ই জানাতে পারেন নি কবে নাগাদ এই মেরামত কাজ শুরু হতে পারে।
বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়ায় গোমতীর বাঁধ ভাঙ্গনে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সাংবাদিক গোলাম কিবরিয়া জানান, আমরা ভয়ে আছি- এলাকার এক ফলন নষ্ট হয়েছে। আবার যদি ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে পানি আসে তাহলে আবার কৃষকদের ক্ষতির শিকার হতে হবে। আমরা চাই অবিলম্বে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় এই বাঁধ মেরামত কাজ শুরু হোক।
স্থানীয় বাসিন্দা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ওসমান ফারুক জানান, এলাকার সবাই ভয়ে ভয়ে থাকে- টেলিভিশন পত্রিকায় দেখে যে আবার পানি বাড়তে পারে। তাই সবাই চায় ভয়ে না থাকুক। দেখলাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এসে কিছু মাপামাপি করে গেলেন- তবে বুঝা যাচ্ছে না কবে নাগাদ মেরামত কাজ শুরু হবে।
সম্প্রতি গোমতী নদীর বাঁধ ভাঙ্গনে স্মরনকালের সবচেয়ে প্রলয়ংকরী বন্যার শিকার হয়েছে বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা। অন্তত ৯ হাজার বাড়িঘর একেবারে বিধ্বস্ত হয়েছে প্লাবনে। নষ্ট হয়েছে মাঠ ভর্তি আমনের ফসলসহ ভেসে গেছে মাছের ঘের, গবাদিপশু, হাঁস মুরগির খামার। টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পানির নিচে তলিয়ে ছিলো বিস্তীর্ণ এলাকা। কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়সার আরো জানান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয় জানিয়েছেন খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বরাদ্দ দিবেন। বৃষ্টির কারণেও মেরামত কাজ কিছুটা বিলম্ব হয়। ইনশাআল্লাহ খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে।