1. admin@dailygomutipratidin.com : admin :
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
কুমিল্লায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালাল চক্রের ৭ দালাল আটক; ৩ মাসের কারাদন্ড বুড়িচংয়ে মোকাম ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হোটেলে হাত-পা বাঁধা নারীর লাশ, ‘স্বামীকে’ খুঁজছে পুলিশ বুড়িচংয়ে যুবদলের সদস্য সচিবের সংবাদ সম্মেলন বুড়িচং এসোসিয়েশন ফ্রান্স(বাফ)” এর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন ও বাৎসরিক আনন্দ ভ্রমণ-২০২৪ উদযাপিত বুড়িচং সদর ইউনিয়ন জগতপুর গ্রামের  বিএনপি ও এর অংগসংগঠনের কর্মী সমাবেশ।  চান্দিনা থানা ঘেরাও করেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারী, কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ বুড়িচং রাজাপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও এর অংগসংগঠনের কর্মী সমাবেশ সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধূরী আর নেই বুড়িচংয়ে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উদযাপিত

চট্টগ্রামে ২জন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের উগ্রবাদী পুস্তিকা সহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪
  • ৮২ বার পঠিত

শাহীন আলম সরকার :

চট্টগ্রামে ২জন নিষিদ্ধ আনসার আল ইসলাম’ এর ২ জন সক্রিয় সদস্যকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন শিকলবাহা ইউনিয়ন এলাকা থেকে উগ্রবাদী পুস্তিকা সহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭।

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ এর বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। সাংগঠনিকভাবে পূর্বের মতো সারাদেশে একযোগে পরিকল্পিতভাবে নাশকতা সৃষ্টি করার সক্ষমতা না থাকলেও, সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে নাশকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা। তবে র‌্যাবের কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযানের ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা চালিয়েও বারবার ব্যর্থ হয়েছে এবং তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।

র‌্যাব প্রতিনিয়ত অভিযান ও নজরদারি পরিচালনার মাধ্যমে জঙ্গিবাদ দমনে কার্যকরী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কেএনএফ’ এর সাথে একত্রিত হয়ে পাহাড়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’এর আমীর ও শীর্ষস্থানীয় নেতা সহ প্রায় শতাধিক জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এছাড়াও নিষিদ্ধ ঘোষিত আনসার আল ইসলাম ও হুজি সহ অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে র‌্যাবের নিয়মিত নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ সকল জঙ্গি সংগঠনের তিন হাজারের অধিক এবং হলি আর্টিজান হামলার পরবর্তী সময়ে প্রায় দুই হাজার জঙ্গিকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে র‌্যাব। সাম্প্রতিক সময়ে র‌্যাব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে, নিষিদ্ধ ঘোষিত বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন নতুন সংগঠনের নামে সদস্য সংগ্রহ করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা চালাচ্ছে। র‌্যাব জঙ্গি সংগঠনের এরূপ কার্যক্রমের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

সাম্প্রতিক সময়ে গত ২৩ মে ২০২৪ ইং তারিখ র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর গুলিস্থান ও সাইনবোর্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে “আনসার আল ইসলাম” এর ৩ জন শীর্ষ স্থানীয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। যাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তারা আফগানিস্থানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এ যোগাদান করে। কিন্তু র‌্যাব সহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের ফলে আনসার আল ইসলাম এর কার্যক্রম প্রায় স্তিমিত হয়ে পড়লে আনসার আল ইসলামের নামে নতুন সদস্য সংগ্রহ সহ কার্যক্রম পরিচালনা এবং চলমান রাখার জন্য গ্রেফতারকৃতরা আনসার আল ইসলাম মতাদর্শী ‘শাহাদাত’ নামে নতুন একটি জঙ্গি সংগঠন তৈরি করে নতুন সদস্য সংগ্রহ সহ দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা শতাধিক। যোগাযোগের জন্য তারা ব্যবহার করে End To End Encrypted বিভিন্ন মেসেঞ্জার এবং মোবাইল অ্যাপ। ‘বিপ’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ তাদের কাছে বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যা প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

পরবর্তীতে অব্যাহত গোয়েন্দা নজরদারি এবং তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায় ‘শাহাদাত’ গ্রুপটি সালাহউদ্দিন নামক এক প্রবাসীর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। যিনি বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছে। এই গ্রুপের অন্যান্য সদস্যরা ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব সদর দপ্তর, ঢাকা এর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৭ এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ১৪ জুন ২০২৪ ইং তারিখে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন শিকলবাহা ইউনিয়ন এলাকার একটি পরিত্যক্ত একতলা ঘর থেকে জঙ্গিবাদী মিটিং পরিচালনাকালীন, “শাহাদাত” গ্রুপের দুইজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করে। এতে জব্দ করা হয় একাধিক জিহাদি বই এবং অন্যান্য আলামত। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মোঃ আসাদুজ্জামান আসিফ (২২), জেলা- পঞ্চগড় এবং মোহাম্মদ আহাদ (২১), জেলা- পাবনা। এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে ০৫/০৬ জন পালিয়ে যায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা উক্ত সংগঠনের সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। তারা বিভিন্ন সময় অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী নেতাদের উস্কানিমূলক বক্তব্য শুনে-দেখে উগ্রবাদে উদ্বদ্ধ হয়ে এবং উক্ত সংগঠনে যোগদান করে। পরবর্তীতে তারা “আনসার আল ইসলাম” এর মতাদর্শে পরিচালিত নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘শাহাদাত’ গ্রুপের নামে সদস্য সংগ্রহ ও দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা। এই লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের উপর নির্যাতন সহ বিভিন্ন ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে ভুল বুঝিয়ে সংগঠনের সদস্যদের ও নতুন সদস্য সংগ্রহ করে তাদেরকে বিভিন্ন অপব্যাখা ও মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে দেশের বিচার ও শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিতৃষ্ণা তৈরি করে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য সদস্যদেরকে উগ্রবাদী করে তোলা। এ উদ্দেশ্যে সংগঠনের সদস্যদেরকে তারা বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা, মুসলমানদের উপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সরবরাহ করতো। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তারা মসজিদ, বাসা বা বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের নিয়ে গোপন সভা পরিচালনা করতো এবং সংগঠনের সদস্যদের শারীরিক প্রশিক্ষণ প্রদান করতো। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষত চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, যশোর, সাতক্ষীরা সহ ঢাকার আশেপাশের বিভিন্ন এলাকাকে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য নির্ধারণ করেছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতরা তাদের গ্রুপকে আরো শক্তিশালী করার জন্য সমমনা উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষনেতাদের সাথে তাদের সুসম্পর্ক রয়েছে বলে জানায়। গ্রেফতারকৃতরা তাদের তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে নতুন গোপনীয় এ্যাপস এর মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করতো এবং সংগঠনের সকল প্রকার নির্দেশনা এই এ্যাপসের মাধ্যমে প্রদান করতো বলে জানা যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, এ সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য, শিক্ষিত এবং উগ্র উঠতি বয়সীদের আকৃষ্ট করে দেশ বিরোধিতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা। এ লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করতে তারা সংগঠনের সদস্যদের গোপনে শারীরিক প্রশিক্ষণ প্রদান করতো বলেও জানা যায়। তারা বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখতো এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন উগ্রবাদী গ্রুপে তাদের বিচরণ ছিল বলে জানা যায়।

উল্লেখ্য পূর্বে শাহাদাত জঙ্গি সংগঠনের তিনজন সক্রিয় সদস্য র‍্যাব-৩ কর্তৃক গ্রেপ্তারের পর এ সংগঠনটির অন্যান্য সদস্যরা সতর্ক হয়ে যায়। সংগঠনের নিয়ন্ত্রণকারী সালাউদ্দিন সকলকে নিষ্ক্রিয় হয়ে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়া সংক্রান্ত সতর্ক বার্তার একটি অডিও রেকর্ড র‍্যাব এর হাতে আসে। তদন্তের সুবিধার্থে উক্ত রেকর্ডটিও আলামত আকারে জব্দ করা হয়। এছাড়াও ‘গোরাবা’ নামক একটি অনলাইন গ্রুপে নিয়মিত অনলাইন মিটিং এর তথ্যও পাওয়া যায়।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দৈনিক গোমতী প্রতিদিন
Theme Customized By Shakil IT Park