গোমতী প্রতিদিন ডেক্স :
আমাদের দেশে প্রতিবছর পানিতে ডুবে বহু মানুষ প্রাণ হারায়। প্রাণ হারানোর দিক থেকে শিশুর সংখ্যাই বেশি। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের শিশুরা নিউমোনিয়া রোগের পরই সবচেয়ে বেশি পানিতে ডুবে প্রাণ হারায়। তাই শিশুদের এই অকাল মৃত্যু রোধে সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন হতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে প্রথমেই জানতে হবে কোন কোন কারণে শিশুরা পানিতে ডুবে প্রাণ হারাচ্ছে। শিশুদের পানিতে ডোবার অন্যতম কারণ হলো বাবা-মায়ের অসচেতনতা ও অসতর্কতা। গ্রামে দেখা যায় বাবারা জীবিকার তাগিদে বেশি সময় বাইরে বাইরে থাকেন এবং মায়েরা খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে গৃহস্থালি কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন; শিশুকে সঠিকভাবে দেখাশোনা করতে পারেন না। এর ফলে একটি শিশু তার বাবা-মায়ের অজান্তে বাড়ির পাশে পুকুর বা জলাশয়ের কাছে গিয়ে কৌতূহলবশত পানিতে নেমে যায় এবং সাঁতার না জানার কারণে পানিতে ডুবে প্রাণ হারায়। এছাড়াও পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো সঠিক তত্ত্বাবধান ও শিক্ষার অভাব। একজন শিশুকে সাঁতার শেখানোর সঠিক বয়স ৫ বছর। কিন্তু দেশে এ বয়সে খুব কম শিশুকেই সাঁতার শেখানো হয়। বাড়ির পাশে অপ্রয়োজনীয় ডোবা বা জলাশয় থাকাও শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যুর অন্যতম কারণ। তাই শিশুর অকাল মৃত্যু রোধে আমাদের এসব দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু কমিয়ে আনার প্রথম ধাপ হলো বাবা-মায়ের সচেতনতা। একটা শিশু হাঁটা শেখার পর তাকে চোখে চোখে রাখতে হবে এবং সে যেন বাড়ির পাশের পুকুর বা জলাশয়ের দিকে না যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। বাড়ির পাশের পুকুর বা জলাশয়ের চারদিকে বেড়া দিতে হবে এবং অপ্রয়োজনীয় পুকুর বা গর্ত-ডোবা থাকলে বন্ধ করে দিতে হবে। এছাড়া একটি শিশুর ৫ বছর বয়স হলে অবশ্যই তার সাঁতার শেখার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। সাঁতার শেখার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে শিশুকে অবগত করতে হবে। শ্রেণি শিক্ষকও এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি সাঁতার শিখতে শিক্ষার্থীকে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। বেশ কিছুদিন আগে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার কমাতে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে; যদি ওই পদক্ষেপগুলো সঠিকভাবে কার্যকর করা হয়, তাহলেও শিশুমৃত্যুর হার অনেকাংশে হ্রাস পাবে।